রাজধানীতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান।
রাজধানীতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান![]() |
| রাজধানীতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান । ছবি : সংগৃহীত |
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন রাজনৈতিক দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে ঐক্যবদ্ধ প্রস্তাব দিতে হবে। সরকার নিজে থেকে কোনো নতুন আলোচনার আয়োজন করবে না। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দলগুলো যদি কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে সরকার নিজ সিদ্ধান্ত নেবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা কাউকে আলটিমেটাম দিইনি, শুধু অনুরোধ জানিয়েছি। দলগুলো আলোচনার ফল দিলে ভালো, না দিলে সরকার নিজের মতো পদক্ষেপ নেবে।”
এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দুইটি বিকল্প সুপারিশ দিয়েছিল সনদ বাস্তবায়নের জন্য। একটিতে বলা হয়েছিল, বিশেষ আদেশ জারি করে গণভোট আয়োজন করা হবে এবং সেই ভোটে অনুমোদন পেলে আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে। আরেক প্রস্তাবে সময়সীমা থাকলেও পরবর্তী পদক্ষেপ উল্লেখ করা হয়নি।
কিন্তু কমিশনের প্রস্তাব দেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ আরও তীব্র হয়। বিএনপি বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংশোধনের কোনো সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই, তাই এখন গণভোট করা অযৌক্তিক। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী কয়েকটি দল চাইছে, নির্বাচনের আগেই গণভোট হোক।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “দলগুলোর আলোচনায় একজন নিরপেক্ষ সমন্বয়কারী দরকার, আশা করি প্রধান উপদেষ্টা সেই ভূমিকা পালন করবেন।”
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকার বিষয়টিকে টালবাহানা করছে। তাদের মতে, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সরকার সরাসরি আদেশ জারি করা উচিত ছিল।
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আরও জানানো হয়, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা অপরিবর্তিত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গৃহায়ণ উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৫ বছরে কঠিন সময় পার করে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছে। আমরা আশা করছি, এবারও তারা নিজেরা আলোচনা করে সরকারের জন্য একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেবে।”
🔹 সারাংশে মূল পয়েন্টগুলো:
উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে রাজনৈতিক মতভেদ নিয়ে উদ্বেগ।
দলগুলোকে এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ প্রস্তাব দিতে আহ্বান।
সরকার নতুন আলোচনা আয়োজন করবে না।
বিএনপি গণভোটের বিরোধী, জামায়াত নির্বাচনের আগেই গণভোট চায়।
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা অব্যাহত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন