রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাকসু নির্বাচনের আগে প্রাণবন্ত নির্বাচনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত
ছাত্র সংসদ নির্বাচন ২০২৫
![]() |
| রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাকসু নির্বাচনের আগে প্রাণবন্ত নির্বাচনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত | ছবি : সংগীত |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হলো এক প্রাণবন্ত ‘নির্বাচনী বিতর্ক’। শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্তমঞ্চে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়, যেখানে সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থীরা অংশ নেন।
এবারের রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে মোট ১৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন সংগঠন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে নয়জন বিতর্কে অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন—
‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ),‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলের মেহেদী মারুফ,‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের তাসিন খান,‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’-এর ফুয়াদ রাতুল,‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’-এর মাহবুব আলম,‘অপরাজেয় একাত্তর অপ্রতিরোধ্য চব্বিশ’ প্যানেলের মাসুদ কিবরিয়া,এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নোমান ইমতিয়াজ ও আবদুর নূর।
বিতর্কের ধরন ও পর্বসমূহ
বিতর্কটি প্রেসিডেনশিয়াল টিভি ডিবেটের আদলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে চারটি পর্ব ছিল— উদ্বোধনী বক্তব্য, নীতিগত পরিকল্পনা উপস্থাপন, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং সমাপনী বক্তব্য। প্রতিটি পর্বে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়, যাতে প্রার্থীরা নিজেদের চিন্তাধারা ও পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক পারভেজ আজহারুল হক (প্রিন্স), সহযোগিতায় ছিল রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ফোরাম।
প্রার্থীদের বক্তব্যে উঠে আসে নানা দৃষ্টিভঙ্গি
বিতর্কে প্রার্থীরা নিজেদের নীতি, ইশতেহার ও বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন নিয়ে পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী নোমান ইমতিয়াজ বলেন,
> “রাকসু একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও এখন সেটিকে দলীয় রাজনীতির প্রভাবিত প্ল্যাটফর্মে পরিণত করা হয়েছে। আমাদের সবার উচিত রাকসুকে তার মূল অরাজনৈতিক কাঠামোয় ফিরিয়ে আনা।”
অন্যদিকে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের মোস্তাকুর রহমান জানান,
> “আমাদের প্যানেলটি ইনক্লুসিভ, যেখানে বিভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা এমন একটি রাকসু চাই যা সবার প্রতিনিধিত্ব করে।”
বামপন্থী ছাত্রসংগঠন-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন,
> “রাকসু হতে পারে গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস গঠনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। নির্বাচিত হলে আমরা শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা, খাদ্যসংকট এবং সাইবার বুলিং প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ নেব।”
উপসংহার
বিতর্কে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের যুক্তি, বক্তব্য ও পরিকল্পনা দর্শকদের মধ্যে প্রাণবন্ত পরিবেশ তৈরি করে। নির্বাচনের আগে এমন একটি আয়োজন শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন