ওসমান হাদি হত্যা মামলায় ফয়সাল ও সংশ্লিষ্টদের হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য
ওসমান হাদি হত্যা মামলায় ফয়সাল ও সংশ্লিষ্টদের হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য![]() |
| ছবি: সংগৃহীত |
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটির বেশি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই আর্থিক কার্যক্রমের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী ফয়সাল করিম মাসুদসহ তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচার সংক্রান্ত পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইডি।
হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কার্যক্রম
সিআইডি জানায়, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন দিক নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করা হয়।
ঘটনাস্থলে দ্রুত ক্রাইমসিন ইউনিট পাঠানো, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, গুলির খোসা উদ্ধার এবং অন্যান্য আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে সংস্থাটি।
ব্যাংক হিসাব ও চেকবই বিশ্লেষণ
অনুসন্ধানকালে অভিযুক্তের পরিবারের সদস্য ও সহযোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই জব্দ করা হয়। সেগুলো বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন না হওয়া চেকগুলোর সম্মিলিত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।
সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে।
গ্রেপ্তার ও আইনি পদক্ষেপ
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল এখনও গ্রেপ্তার না হলেও, আলামত গোপন ও পলায়নে সহায়তার অভিযোগে তার পরিবারের সদস্যসহ একাধিক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া অভিযুক্ত ও তার সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জন্য যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনো সংঘবদ্ধ নেটওয়ার্ক, অর্থায়নকারী গোষ্ঠী কিংবা অস্ত্র সরবরাহকারী চক্র সক্রিয় ছিল কিনা, সে বিষয়েও একাধিক টিমের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার ও পুরো অপরাধচক্র উন্মোচনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন